যশোর মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসের ৫ পুকুরে ইজারা ছাড়াই মাছ চাষ করা হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির দুই-একজন কর্মীকে ম্যানেজ করে স্থানীয় কয়েক ব্যক্তি গত ৭ বছর মাছ চাষ করলেও অজ্ঞাত কারণে নিশ্চুপ রয়েছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। ফলে প্রতিবছর এখান থেকে লাখ লাখ টাকা রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, যশোর মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার জন্য শহরের হরিণার বিল এলাকায় সরকার ২১ একর জমি অধিগ্রহণ করে। পর্যায়ক্রমে সেখানে একাডেমিক ভবন চালুসহ বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ চলমান আছে। এর মধ্যে ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের জায়গাটি মাটি ভরাটসহ বিভিন্ন কার্যক্রম আটকে রয়েছে। বর্তমানে ওই জলাশয় বেঁধে পুকুরে পরিণত করা হয়েছে। এছাড়া ছাত্রাবাসের পাশে রয়েছে আরও একটি পুকুর। প্রায় ১৭ একর এ জলাশয়ে ২০১৪ সাল থেকে মাছ চাষ করছেন স্থানীয় উজ্জল, শিমুল, লিটন, নজরুলসহ কয়েক জন। তারা কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ইজারা না নিয়ে মাছ চাষ করে ফায়দা লুটছেন।
সরেজমিনে মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখা যায়, কলেজের একাডেমিক ভবনের পশ্চিমে মহিলা ও পুরুষ হোস্টেল। ক্যাম্পাসের মাঝ বরাবর পারমাণবিক কেন্দ্র স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে। এছাড়া কলেজের প্রধান প্রবেশ দ্বার থেকে অর্থাৎ কলেজের উত্তর পশ্চিম কোণে ৫শ’ শয্যা হাসপাতালের জায়গা খালি পড়ে আছে। এ জায়গাগুলোতে মাটি ভরাট না করায় কলেজের কতিপয় কর্মচারীর সহযোগিতায় স্থানীয় নয়ন, শিমুল, উজ্জল, হাবিব জলাশয় ঘিরে পুকুর তৈরি করে মাছ চাষ করে আসছেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে কলেজের হিসাবরক্ষক জয়নাল আহম্মেদকে ম্যানেজ করে তারা মাছ চাষ করছেন। বিনিময়ে মাছ চাষিরা কিছু অর্থও দিয়ে থাকেন জয়নালের কাছে।
তবে কলেজের হিসাবরক্ষক জয়নাল আহম্মেদ অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, মেডিকেল কলেজের হাসপাতাল নির্মাণকাজ যে কোনো সময় শুরু হতে পারে। এজন্য ওই স্থান মাটি ভরাটের এখনও খালি পড়ে আছে। এ সুযোগে স্থানীয় কতিপয় লোক ২০১৪ সাল থেকে মাছ চাষ করে আসছেন ঠিকই। তবে এজন্য তাদের কাছ থেকে কোনো অর্থ নেওয়া হয় না। তিনি আরও বলেন, মাছ চাষিরা সবাই স্থানীয় হওয়ার কারণে জীবনের ভয়ে বাধা দেওয়া হয় না। আর ওই স্থানে যে কোনো সময় মাটি ভরাট কাজ শুরু হতে পারে। তাই কলেজ কর্তৃপক্ষ ইজারা দিতে পারছেন না।
এ ব্যাপারে কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মহিদুর রহমান বলেন, মাছ চাষের বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। আমি অধ্যক্ষ হিসেবে সবেমাত্র দায়িত্ব নিয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
No comments:
Post a Comment