যশোরে হরিজন পল্লীতে চলছে জমজমাট অবৈধ মদের ব্যবসা - Jashore Tribune

Breaking

Home Top Ad

Post Top Ad

a1

Friday, June 11, 2021

যশোরে হরিজন পল্লীতে চলছে জমজমাট অবৈধ মদের ব্যবসা


 প্রাপ্ত বয়স্ক হরিজনদের জন্য জনপ্রতি মাসিক মাত্র সাড়ে ৯ লিটার মদ বরাদ্দ থাকলেও ডজনখানেক চিহ্নিত ব্যক্তি অবৈধ পন্থায় শ’শ’ লিটার মদ এনে অবৈধ বেচাকেনা করে চলেছে। একজন লাইসেন্সধারী ব্যবসায়ীর অসাধু দ্ইু কর্মচারী গোপনে ড্রাম ড্রাম মদ সাপ্লাই দিচ্ছেন হরিজন পল্লীর ওই চিহ্নিত সদস্যদের মধ্যে। তাই নিয়ে সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত শহরের নানা শ্রেণিপেশার মানুষ মদ পান করতে ভীড় জমাচ্ছে সেখানে।

শহরের অনেক ‘ভদ্রজন’ নীতি নৈতিকতা ভুলুন্ঠিত করে আসা যাওয়া করছেন ওই পল্লীতে। চলমান করোনা সঙ্কটের সময়েই চলছে অবৈধ মদ বেচাকেনা। এ ঘটনায় ওই এলাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।
এ ব্যাপারে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন হরিজন পল্লী এলাকার অনেক দোকানী। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে পুলিশের পক্ষেও জানানো হয়েছে।
একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, শহরের নেতাজী সুভাষ চন্দ্র রোডের (পুরোনো পৌরসভার) উত্তর পাশের হরিজন পল্লী এখন অলিখিত মদ বাজারে পরিনত হয়েছে। এখানে সকাল থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত শহরে লোকজন আসা-যাওয়া করছে মদ কিনতে, আবার কেউ বসে পান করতে। মাথা প্রতি মাসে মাত্র সাড়ে ৯ লিটার  মদ বরাদ্দ থাকলেও চিহ্নিতরা মাসের পর মাস মাড়–য়া মন্দির এলাকার একটি ডেরা থেকে প্রতিদিন জনপ্রতি শতাধিক লিটার মদ এনে বিক্রি করছেন। মাথাপ্রতি তাদের শুধু মাসে সাড়ে ৯ লিটার খাওয়ার পারমিট রয়েছে। অথচ একজন লাইসেন্সধারী মদ বিক্রেতার চোখ ফাঁকি দিয়ে তারই দুই কর্মচারী গৌর ওরফে গহর ও লাভলু নামে দুজন অবৈধভাবে এ মদ সাপ্লাই দিচ্ছে। বিধিভঙ্গ করে ওই দুই কর্মচারী মদ সরবরাহ করে নিজেরা কাড়ি কাড়ি টাকা আয় করছেন। হরিজন পল্লীর রাজু, গোবিন্দ, সার্জেন্ট, জুয়েল, দেউলিয়া, মতি লাল, অশোক, রাজেন, সুজন, মাসি, কালু, লক্ষণসহ এক ডজন চিহ্নিত হরিজন সদস্য এই অবৈধ মদ বেচাকেনায় লিপ্ত রয়েছেন। এরা কাক ডাকা ভোরে বড় বড় ঢম ও ড্রাম নিয়ে ছুটে যান ওই মাড়–য়া মন্দির এলাকার একটি ডেরায়। সেখান থেকে গৌর ও লাভলুর কাছ থেকে নিয়ে আসছেন ড্রাম ড্রাম মদ। বিক্রি চলে সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত।
খাওয়ার লাইসেন্স ছাড়াই বিভিন্ন শ্রেণি পেশার লোক যাচ্ছেন ওই পল্লীতে। চক্রটি আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার চোখ ফাঁকি দিয়ে এই কারবার চালাচ্ছে। তারা অনেক দিন ধরে বাংলা মদের নামে কারবার চালিয়ে যাচ্ছে। কেরু কোম্পানির মদ বলে লাইসেন্সধারীর অজ্ঞাতে অসাধু কমী গৌর ও লাভলুর কাছ থেকে মদ কিনছে। ওই পল্লীর কারো লাইসেন্স ও কাগজপত্র না থাকলেও ওই সিন্ডিকেট পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে বহাল তবিয়তে ব্যবসা করছে। বাংলা মদের আদলে ব্যবসা পরিচালনাকারী চক্রটি লকডাউনেও সক্রিয়।
এদিকে, বিধি অনুযায়ী ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া কোনো মুসলিম মদপান করতে পারবে না। কিন্তু হরিজন পল্লীতে তা অমান্য করে অহরহ মুসলিমরা সেখানে যাচ্ছেন মাসের পর মাস। প্রতিনিয়িত মদ কিনে পান করছেন। এখানে বিক্রির ক্ষেত্রে ১৯৫০ সালের প্রহিবিশন রুলস লঙ্ঘন করা হচ্ছে। আর দায়িত্বশীলরা নিরব দর্শকের ভূমিকায় থাকায় মদ বিক্রি ও সেবন ডেরার সামনে ও আশেপাশে যথেচ্ছা মাতলামিও হচ্ছে।
এ ব্যাপারে যশোর সদর ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর সুমন ভক্তের সাথে কথা বললে তিনি  জানিয়েছেন, হরিজন পল্লীর লোকজনের কাছে পারমিট অনুযায়ী মদ বিক্রি করতে পারবেন লাইসেন্সধারীরা। কিন্তু হরিজনপল্লীতে ব্যবসার বা বিক্রির উদ্দেশ্যে সাপ্লাই দেয়া যাবে না। পারপিট ছাড়া মদ সম্পূর্ণ নিষেধ করে দেয়া আছে। এ ব্যাপারে খোঁজখবর নেয়া হবে। ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। হরিজন পল্লীর দিকে নজরদারি করা হবে। খাওয়ার পারমিট ছাড়া মদ পান করলেও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সূত্রঃগ্রামের কাগজ

No comments:

Post a Comment

Post Bottom Ad