আজ ৫ সেপ্টেম্বর, দেশের সর্বোচ্চ সামরিক সম্মাননা ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ খেতাবে ভূষিত শহীদ ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখের ৫৪তম শাহাদাতবার্ষিকী।১৯৭১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর, যশোরের ছুটিপুর (গোয়ালহাটি) এলাকায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আক্রমণ প্রতিরোধ করতে গিয়ে আহত অবস্থাতেও তিনি দলের জীবন নিরাপদ করেছেন। গুলি ও মর্টারের আঘাতে গুরুতর আহত হলেও নিজের জীবন উৎসর্গ করে শত্রুকে সফলভাবে ঠেকিয়ে দেন, শেষ মুহূর্তে প্রয়োজনে একা যুদ্ধ চালিয়ে যান, যা তাকে বীর-শ্রেষ্ঠ সম্মান এনে দেয়
নূর মোহাম্মদের শহীদ হওয়ার স্মৃতিবিজড়িত স্থান আজও শার্শার কাশিপুর গ্রামের ডিহি এলাকায় গর্বভরে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। তাঁর সমাধি শুধু শার্শাবাসীর জন্য নয়, বরং পুরো জাতির কাছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গৌরবের প্রতীক হয়ে আছে। প্রতি বছর সেখানে হাজারো মানুষ উপস্থিত হয়ে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান এই মহান শহীদকে।
নূর মোহাম্মদ শেখ জন্মগ্রহণ করেন ১৯৩৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি, নড়াইল জেলার মহেশখালী গ্রামে। ১৯৫৯ সালে তিনি তৎকালীন ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস (বর্তমান বিজিবি)-এ যোগ দেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি ৪ নম্বর ইপিআর উইংয়ের অধীনে যশোর অঞ্চলে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মুখযুদ্ধে অংশ নেন।
১৯৭১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর, ছুটিপুর সীমান্ত এলাকায় পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে তিনি গুরুতর আহত হন। কিন্তু নিজের জীবন তুচ্ছ করে তিনি সহযোদ্ধাদের পেছনে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন এবং একাই শত্রুর আক্রমণ ঠেকাতে থাকেন। তাঁর আত্মত্যাগ ও বীরত্বপূর্ণ যুদ্ধ সহযোদ্ধাদের জীবন রক্ষা করে এবং সেই স্মরণীয় যুদ্ধ তাঁকে এনে দেয় জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান হওয়ার গৌরব।
স্বাধীনতার পর, বাংলাদেশ সরকার তাঁর বীরত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ তাঁকে ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ উপাধিতে ভূষিত করে, যা দেশের সর্বোচ্চ সামরিক সম্মান। কাশিপুরে অবস্থিত তাঁর সমাধি ও স্মৃতিস্তম্ভ নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানাতে ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।
No comments:
Post a Comment