যশোরের অভয়নগরে ব্যবসায়ী শাহনেওয়াজ কবীর টিপুকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বালুতে পুঁতে রেখে চার কোটি টাকা চাঁদা আদায়ের চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে। ঘটনায় বিএনপি নেতাসহ দুইজনকে অভিযুক্ত করে ব্যবসায়ীর স্ত্রী আসমা খাতুন সেনা ক্যাম্প ও থানায় অভিযোগ দিলেও পুলিশ তা গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
ঘটনার সূত্রপাত ২০২৩ সালের ২ সেপ্টেম্বর। ব্যবসায়ী টিপুকে কৌশলে ডেকে নিয়ে মারধর ও অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে প্রথমে দুই কোটি টাকা আদায় করেন নওয়াপাড়া পৌর বিএনপির (সাময়িক স্থগিত) সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান জনি। পরে ১৮ সেপ্টেম্বর আরও দুই কোটি টাকা দাবি করে টিপুকে আবারও অপহরণ করে বালুতে পুঁতে রাখার অভিযোগ রয়েছে। অর্থের বিনিময়ে টিপুকে মুক্তি দেওয়া হয়।
ভুক্তভোগী পরিবারের দাবি, মোট ৪ কোটি টাকা আরটিজিএসের মাধ্যমে জনি ও সাংবাদিক মফিজুর রহমানের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে এক কোটি টাকার চেক ও ছয়টি ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষরও নিয়েছেন তারা।
টিপুর স্ত্রী আসমা খাতুন অভিযোগ করেন, এসব ঘটনা জানিয়ে অভয়নগর থানায় লিখিত অভিযোগ দিলেও পুলিশ তা গ্রহণ করেনি। তবে থানার ওসি আব্দুল আলীম বলেন, “আমরা এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। মৌখিক অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করেছি।”
আজ শনিবার (২ আগস্ট) দুপুরে সেনাবাহিনী যশোর শহরের বেজপাড়ায় অভিযুক্ত জনি ও সাংবাদিক মফিজুর রহমানকে ধরতে অভিযান চালায়। তবে তিন ঘণ্টার অভিযানে কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। সেনা সূত্র জানায়, অভিযুক্তদের ধরতে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
অভিযুক্তদের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকলেও, জনি নিজের ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাসে দাবি করেন, তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার। তিনি লেখেন, "সময় এলে ষড়যন্ত্রকারীদের শিকড় উৎপাটন করব।"
এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু বলেন, “জনির কর্মকাণ্ডের বিষয়ে আমরা অবগত নই। তবে শৃঙ্খলাবিরোধী কার্যকলাপে জড়িত থাকায় তার বিরুদ্ধে আগেই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তিনি এখন দলের কেউ নন।”
ব্যবসায়ী টিপু বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “পরিবারসহ আতঙ্কে দিন পার করছি। এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়েছি। ন্যায়বিচারের আশায় আমার স্ত্রী সেনা ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছেন।”
No comments:
Post a Comment