নিজের প্রতিষ্ঠিত জামেয়া ইমদাদিয়া মাদানিনগর মাদরাসা মাঠে চির নিদ্রায় শায়িত হয়েছেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত কওমি আলেম সাবেক ধর্মপ্রতিমন্ত্রী মুফতি মোহম্মদ ওয়াক্কাস।বুধবার (৩১ মার্চ) মাগরিবের নামাজের পর জানাজা শেষে তার দাফন সম্পন্ন হয়। জানাজায় ইমামতি করেন মরহুমের বড় ছেলে মাওলানা সুহাইল আহমদ।
বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্জু, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, গহরডাঙ্গা মাদরাসার মুহতামিম মুফতি রুহুল আমিন, ঢাকা বারিধারা মাদরাসার শায়খুল হাদিস মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক, বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড- বেফাকের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা ড. গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, আরজাবাদ মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা বাহাউদ্দীন জাকারিয়া, জামিয়া মাহমুদিয়া বরিশালের মুহতামিম মাওলানা উবায়দুর রহমান মাহবুব, বারিধারা মাদরাসার সাবেক ভারপ্রাপ্ত মুহতামিম মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমী, মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, খুলনা দারুল উলুমের মুহতামিম মাওলানা মুশতাক আহমদসহ লাখো মানুষ জানাজায় অংশ নেন। এসময় মাদরাসামাঠ ছাড়াও আশপাশের বাড়ির ছাদ, পতিত জমি ও রাস্তায় দাঁড়িয়ে জানাজায় অংশ নেন মানুষ।
এরআগে অ্যাম্বুলেন্সযোগে বুধবার বিকেল চারটার দিকে মুফতি ওয়াক্কাসের মরদেহ মাদানিনগর মাদরাসায় পৌঁছায়। প্রিয় মানুষটির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে তাকে শেষবারের মতো দেখতে দুপুর থেকে মাদরাসা মাঠে মানুষের ঢল নামে।
এদিকে, মুফতি ওয়াক্কাসের মৃত্যুর খবর শুনে দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে বিকেলে মাদানিনগর মাদরাসায় যান সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য। এসময় মণিরামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পৌরসভার মেয়র কাজী মাহমুদুল হাসান উপস্থিত ছিলেন।
বুধবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে রাজধানীর মহাখালী শেখ রাসেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন মুফতি ওয়াক্কাস। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত ২২ মার্চ তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর ২৪ মার্চ তাকে মহাখালী শেখ রাসেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
মণিরামপুর উপজেলার মাদানিনগরের প্রখ্যাত জামেয়া ইমদাদিয়া মাদানিনগর মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা মুহতামিম তিনি। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকের সিনিয়র সহ-সভাপতি, হাইয়াতুল উলিয়ার কো-চেয়ারম্যান এবং জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের একাংশের সভাপতি ছিলেন।
ইসলাম প্রচারের পাশাপাশি রাজনীতির মাঠে সরব ছিলেন মুফতি ওয়াক্কাস। এরশাদ সরকারের শাসনামলে তিনি মণিরামপুর থেকে দুইবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তখন তিনি ধর্ম মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী ও জাতীয় সংসদের হুইপের দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালে বিএনপির সাথে জোটবদ্ধ হয়ে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করে মণিরামপুর থেকে আবারো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। এরপর ২০০৮ ও ২০১৮ সালে ধানের শীষে নির্বাচন করে তিনি পরাজিত হন।
No comments:
Post a Comment