যশোর, ২৬ এপ্রিল ২০২৫ — যশোর কোতোয়ালী থানার রামনগর কলুপাড়ায় খাবারে চেতনানাশক মিশিয়ে বাড়ির সদস্যদের অচেতন করে নগদ অর্থ ও স্বর্ণালংকারসহ প্রায় ১২ লাখ টাকার মালামাল চুরির ঘটনায় জড়িত সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশ। অভিযানে আত্মসাৎকৃত স্বর্ণালঙ্কারও উদ্ধার করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী শারমিন সুলতানা শান্তা গত ২৫ এপ্রিল কোতোয়ালী মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে বলা হয়, ১৩ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে কয়েকজন ব্যক্তি টু-লেটের বিজ্ঞাপন দেখে বাসা ভাড়া নেওয়ার জন্য যোগাযোগ করে এবং অগ্রিম এক হাজার টাকা প্রদান করে। পরদিন তারা বাসার নিচতলায় ভাড়াটিয়া হিসেবে ওঠে। এরপর ১৭ এপ্রিল সন্ধ্যায় তারা নিজেদের 'ভাগ্নে' পরিচয়ে কিছু খাবার পাঠায়, যেখানে চেতনানাশক মিশানো ছিল। রাত ১১টার দিকে বাড়ির সদস্য ও অন্যান্য ভাড়াটিয়ারা অচেতন হয়ে পড়লে তারা নগদ ২ লাখ টাকা এবং আনুমানিক ১০ লাখ টাকার স্বর্ণালংকার চুরি করে পালিয়ে যায়।
ঘটনার পর পুলিশ সুপার মহোদয়ের নির্দেশনায় ডিবি পুলিশের একটি বিশেষ টিম অভিযান পরিচালনা করে। প্রথমে পিরোজপুরের নাজিরপুর থেকে মোঃ জাহারুল (৪৫) ও মোসাঃ মারুফা (৩৫) নামে দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী উদ্ধার করা হয় একাধিক স্বর্ণের চুড়ি, চেইন ও দুল। এরপর খুলনার ফুলতলা থানা এলাকা থেকে মামুন মিয়া (৪৫) কে গ্রেফতার করে তার কাছ থেকেও স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়।
পরবর্তীতে আসামিদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে খুলনার দৌলতপুর থানার নিশাত কমপ্লেক্স এলাকা থেকে আরও দুই আসামি, মোঃ লিটন (৪৭) ও বিপ্লব কর্মকার (৫০) কে গ্রেফতার করা হয়। এদের হেফাজত থেকেও গলিত স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃত আসামিরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে, তারা একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য এবং দীর্ঘদিন ধরে চেতনানাশক প্রয়োগের মাধ্যমে চুরি ও প্রতারণার সাথে জড়িত ছিল।
গ্রেফতারকৃত আসামিরা হলেন:
-
মামুন মিয়া (৪৫), ফুলতলা, খুলনা
-
মোঃ জাহারুল (৪৫), নাজিরপুর, পিরোজপুর
-
মোসাঃ মারুফা (৩৫), নাজিরপুর, পিরোজপুর
-
মোঃ লিটন (৪৭), শিরমনি, খুলনা
-
বিপ্লব কর্মকার (৫০), দৌলতপুর, খুলনা
উদ্ধারকৃত মালামালের মধ্যে রয়েছে একাধিক স্বর্ণালংকার এবং গলিত স্বর্ণ। গ্রেফতারকৃতদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে এবং মামলার তদন্ত চলমান রয়েছে।
No comments:
Post a Comment