বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষায় ছাত্রলীগ দায়বদ্ধ। - Jashore Tribune

Breaking

Home Top Ad

Post Top Ad

a1

Wednesday, February 21, 2024

বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষায় ছাত্রলীগ দায়বদ্ধ।

 


ভাষা সত্যিই অনেক চমৎকার। কখনো কখনো নিষ্কন্টক, কখনোবা দ্বিধাদ্বন্দ্বপূর্ণ বৈচিত্র্যময়। মনের ভাব বাংলাতে অনর্গল বলার অধিকার আদায়ের প্রেক্ষিতে যে ভাষা দিবসের আবির্ভাব, রক্ত দিয়ে কেনা সেই ভাষার যখন অসম্মান দেখি, অশুদ্ধ বানান কিংবা উচ্চারণ দেখি, সত্যি কোমল মনটা তখন বেদনাহত হয়। 

আমরা জানি, দেশ ভাগের পর পূর্ব পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী যখন কূটপরিকল্পনার মাধ্যমে বাংলাকে বাদ দিয়ে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার প্রচন্ড চক্রান্ত করেছিল। তখন এই হীন ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ তথা বর্তমান "বাংলাদেশ ছাত্রলীগ" উর্দুর পাশাপাশি বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে পূর্ববাংলার ছাত্র-জনতাকে সাথে নিয়ে দূর্বার আন্দোলন গড়ে তুলেছিল। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি যখন "রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই" স্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে বাংলার আকাশ-বাতাস। তখন ঢাকার রাজপথ রঞ্জিত হয় রফিক, শফিক, সালাম, বরকত, জব্বরসহ নাম না জানা অগণিত শহীদের রক্তে। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধুর দৃঢ় নেতৃত্ব এবং ছাত্রলীগ কর্মীদের সক্রিয় ভূমিকায় ছাত্র জনতার তুমুল দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৫৪ সালের ৭ মে পাকিস্তান গণপরিষদ বাংলা ভাষাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসাবে স্বীকৃতি দেয়। বলা যায়, মায়ের ভাষার অধিকার ও রাষ্ট্রভাষা প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম ছিল বীর বাঙালি জাতির লড়াই-সংগ্রাম আর বীরত্বের গৌরবগাঁথা অধ্যায়। আর বাংলা ভাষা আদায়ে দক্ষিণ এশিয়ার সুপ্রাচীন ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ছিল গৌরবগাঁথা অধ্যায়ের সংগ্রামী সারথি। 

বর্তমানে ভিনদেশী ভাষার আবির্ভাব এবং সঠিক চর্চার অভাবের দরুন; রক্ত দিয়ে কেনা যে ভাষা, সেই ভাষার অসম্মান, অশুদ্ধ বানান কিংবা অশুদ্ধ উচ্চারণে ছড়াছড়ি; যা অবশ্যই প্রত্যাশিত নয়। আর সেজন্যই বাংলা ভাষার সম্মান রক্ষার্থে, বাংলা ভাষার বিকাশকল্পে সাহিত্য চর্চার বিকল্প নেই বলে মনে করি। তাছাড়া ছাত্রলীগের যেহেতু মাতৃভাষা বাংলা আদায়ে দৃঢ় ভূমিকার মাধ্যমে তা আদায়ের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস আছে, সেহেতু বর্তমানে ছাত্রলীগের মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা রক্ষায় অবশ্যই দায়বদ্ধতা রয়েছে। 

আর তাই, জেলা ছাত্রলীগের সাহিত্য বিষয়ক সেল এবং পাঠাগার বিষয়ক সেল সক্রিয় করলে আশু সমস্যার বিস্তর সমাধান সম্ভবপর হবে বলে মনে করি।

সাহিত্য সেল সক্রিয়করণের ফলে সাহিত্য জ্ঞানবৃদ্ধিকল্পে নানাবিধ সৃজনশীল এবং সৃষ্টিশীল সকল কার্যক্রম গৃহীত হবে। যার দরুন সাধারণ শিক্ষার্থীদের বাড়বে বাংলা সাহিত্যের প্রতি তুমুল আগ্রহ, সৃষ্টি হবে বাংলা উপন্যাস, বাংলা কবিতার প্রতি অসীম ভালোবাসা। আর পাঠাগার বিষয়ক সেল সক্রিয়করণ হলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বইপড়ার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হবে। সাহিত্য চর্চা ধারণ এবং লালনের প্রতি সাধারণ শিক্ষার্থীদের তৈরি হবে তীব্র ইচ্ছা। এছাড়াও সাহিত্য সেল এবং পাঠাগার সেল এর যৌথ প্রযোজনায় জেলা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য একটি সাহিত্য সংসদ তৈরি করা সম্ভব হলে বাংলা ভাষার বিকাশ এবং সাহিত্য চর্চা আরো বেগবান হবে। উল্লেখ্য সাহিত্য সংসদে সাহিত্যের নানাবিধ বিষয়ে নিয়ে আলোচনা হয়ে থাকে, জ্ঞানের আদান-প্রদান হয়ে থাকে। যার মাধ্যমে একটি ভাষার চর্চা সঠিকভাবে বিকশিত হতে পারে বলে মনে করি। 


পরিশেষে প্রত্যাশা বাংলা ভাষা স্বসম্মানে, শুদ্ধ উচ্চারণ, শুদ্ধ লেখার মাধ্যমে ছড়িয়ে যাক সমগ্র ।

একুশ ছড়িয়ে যাক , দেশের গন্ডি পেরিয়ে সমগ্র বিশ্বে, সকল ভাষার মধ্যে ।


অমর একুশের এই দিনে বায়ান্নর একুশে ফেব্রুয়ারির সকল ভাষা সৈনিক ও শহিদদের প্রতি থাকবে গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি ও বিনম্র শ্রদ্ধা...


লেখকঃ 

মোঃ রিয়াজ উদ্দীন রেজা

কর্মী, যশোর জেলা ছাত্রলীগ।

No comments:

Post a Comment

Post Bottom Ad