বাংলাদেশের সামুদ্রিক বাণিজ্যে বড় ধরনের পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি), লালদিয়ার চর এবং ঢাকার কেরানীগঞ্জের পানগাঁও ইনল্যান্ড কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশি অপারেটরদের হাতে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
রবিবার (১২ অক্টোবর) ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত এক সেমিনারে এ তথ্য জানান নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ। তিনি বলেন, "চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে এবং কার্যকারিতা উন্নত করতে আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা সম্পন্ন অপারেটরদের যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।"
তিনি জানান, এনসিটি ও লালদিয়ার চর টার্মিনাল ডিসেম্বরের মধ্যে হস্তান্তর করা হবে। পানগাঁও টার্মিনালের ক্ষেত্রে কিছুটা সময় নেওয়া হবে। সচিব আরও বলেন, বর্তমানে বন্দরের ১৩টি গেটের মধ্যে কেবল ছয়টিতে স্ক্যানিং মেশিন রয়েছে, যার মধ্যে অনেকগুলো প্রায়ই বিকল থাকে, ফলে নিরাপত্তা ও কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটে।
বন্দর ব্যবস্থায় বিদেশি অংশগ্রহণের বিষয়ে ব্যবসায়ীদের আপত্তি থাকলেও সচিবের দাবি, “বাস্তবতা বিবেচনায় তারা নিজেরাই পরে সরকারের সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা বুঝবেন।”
সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সমুদ্রগামী জাহাজ মালিক সমিতির সভাপতি আজম জে চৌধুরী, যিনি জাহাজ পরিচালনায় সরকারি ও বেসরকারি পতাকার দ্বৈত নীতির জটিলতার কথা তুলে ধরেন।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান ড. জায়েদী সাত্তার। তিনি বলেন, বাংলাদেশের ছোট জাহাজ নির্মাণ খাত ইতোমধ্যে বড় অর্ডার পাচ্ছে, যা সময়মতো সরবরাহ করা গেলে এই খাত আগামী পাঁচ বছরে দুই বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি শিল্পে পরিণত হতে পারে। তবে এ জন্য বিশেষায়িত ব্যাংকিং কাঠামোর প্রয়োজন বলে তিনি মন্তব্য করেন।
সেমিনারের আলোচকরা মনে করেন, নীতিগত স্বচ্ছতা ও জনস্বার্থ নিশ্চিত করা গেলে বিদেশি অপারেটরদের অংশগ্রহণ বাংলাদেশের বন্দর ব্যবস্থায় নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিতে পারে।
No comments:
Post a Comment